Jump to content

User:প্রমথ রায়

From Wikipedia, the free encyclopedia

প্রমথ রা

রায়'র কবিতা

০১

ভায়োলিন বাজানো মেয়েটি

ভায়োলিন বাজানো মেয়েটি গভীর রাতে

দুঃখ সরোবর থেকে বেদনার সুর তুলে,

যেন কোনো আদিম জিপসী অবিরত হাঁটছে

নিঃস্ব হয়ে নিঃসঙ্গতার মরুভূমিতে

হয় বেদনায় নয়তো মৃত্যু কামনায় ,

তারপর ভায়োলিনে বেজে ওঠে অপেরার অপরাহ্ন সুর

আইনস্টাইন তাঁর অমিমাংসিত সমস্যার সমাধান খোঁজে

আমরাও মিমাংসাহীন বাউন্ডুলে

মেয়েটির ঝাঁকড়া চুল দেখে ভাবি

সেও আমাদের দলে,

নিঃসঙ্গতা পান করে ভুলে যায় রাতের অভিমান

কিংবা সেই বৃদ্ধ নাবিকের মতো হঠাৎ বলে ওঠে,

একদা এক জাহাজ ছিলো

যার মৃত্যু হয়েছিলো মিথ্যে কোনো প্রতিশোধে;

তবুও মৃত্যুই সত্য,

তাই মেয়েটি মৃত্যুর মতো করে সুর তুলে

আর আমরা অবাক হয়ে তার সক্ষমতা অনুধাবন করি,

ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করি,

সে যেন মৃত্যু নয়; বরং দ্বিতীয় জীবন লাভ করে।

০২

হলি ফ্রাইডে

গতকাল আমি আমার কবরের পাশে কিছু পাথর স্তুপ করেছি,

তারপর ভেবেছি কোনো পবিত্র দিনে তা খোদাই করবো,

পাথরে খোদিত হবে তোমার পবিত্র নাম,

আমাদের রাত জাগা গল্পের শিরোনাম

আমরা সর্বদা পবিত্র থাকতে চেয়েছি

তবুও কিছু কুসুমের মতো পাপ আমাদের প্রলুব্ধ করে

আমরা অ্যাডাম এবং ইভ হয়ে উঠি;

থাক সেসব কথা, আজ হলি ফ্রাই ডে

আমরা পবিত্র হয়ে উঠি

প্রার্থনায় বসে নিজেকে শুদ্ধ করে নিই

তারপর বিকেলে এক টুকরো রোমান্স খেয়ে

অতি ক্লান্ত হয়ে রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়বো।

০৩

কবরের পাশের বাবলা গাছটি

এখন শীতকাল; অসুখের লড়াইয়ে ভুলে গিয়েছিলাম

আমার হাত থেকে একে একে খসে পড়েছে

ভুসুকুপা কাহ্ন পা শবরী পাদের নাম

আমি একটি পুরনো কবরের কথা জানি

কবরের পাশে ছিলো খর্বকায় একটি বাবলা গাছ

বাবলা গাছের পাতায় লিখে রাখতাম আমার পূর্বপুরুষের নাম

ভুসুকুপা, কাহ্নপা শবরী পা আমার পূর্বপুরষের নাম

আমি তাদের এপিটাফ লিখেছি বাবলা পাতায়

প্রতি শীতে আমি এপিটাফ পাঠ করি

এবং অসুখ হলে ভাবি আমি ভুসুকুপা, কাহ্নপা শবরী পা।

০৪

আমি ক্রুশবিদ্ধ নই

তোমার কাশফুল শাড়ি আমার মৃত মুখের ছবি আঁকে

কিংবা ভেরোনিকার সেই মায়াবী আঁচল মুছে দেয় যীশুর ক্রুশবিদ্ধ বেদনা;

আজ রেবেকা তপ্নকে খুব মনে পড়ছে

যে তার রুমালে আমার পবিত্র নাম লিখে বলেছিল,

চলো আমরা সাংসারিক হই;

আমি মৃদু হেসে বলেছিলাম,

কিছু কিছু মানুষের চোখ কখনোই জ্বলে না।

০৫

হ্যামলেটের শার্ট

- প্রমথ রায়

শরীরে পরেছি হ্যামলেটের রক্তাক্ত শার্ট

নিজেকে ভাবছি ডেনমার্কের আহত রাজকুমার

এমন করে যদি আমার দেশের রাজকুমার হতাম

যমুনার জলে ধুয়ে নিতাম শার্টের রক্ত!

ডেড সি'র মতো যমুনার জলেও যদি

অকালে মরে যেতো সব জলজ পোকা

আমি হতাম পৃথিবীর উৎকৃষ্টতম রাজা।